চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: কামাল হোসেন
চট্টগ্রাম: ৪ অক্টোবর, ২০২৫ (শনিবার) সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী ব্যাংক থেকে গণহারে চাকরিচ্যুত ও ওএসডি (Officer on Special Duty) হওয়া কর্মীদের পুনর্বহালসহ ছয় দফা দাবিতে আজ শনিবার দুপুরের দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা। চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট এলাকায় এই অবরোধের ফলে দেশের অন্যতম ব্যস্ত এই মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
অবরোধের কারণ: আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে এবং চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে কর্তৃপক্ষ ‘মূল্যায়ন পরীক্ষার’ আয়োজন করে। বহু বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও এই প্রহসনমূলক পরীক্ষা বর্জন করেন বেশিরভাগ কর্মী।
গণহারে চাকরিচ্যুতি ও ওএসডি: এই পরীক্ষা বর্জনের পর প্রায় ৫ হাজারেরও বেশি কর্মীর আইডি ‘আনঅ্যাকটিভ’ করে দেওয়া হয় এবং প্রায় ৪০০ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়। বাকি কর্মীদের ওএসডি (OSD) করে নিষ্ক্রিয় রাখা হয় বলে অভিযোগ।
শাখা বন্ধ ও বিশৃঙ্খলা: গণহারে কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে চট্টগ্রামের পটিয়াসহ বিভিন্ন শাখায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং কিছু শাখা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।
পুলিশি অ্যাকশন: আন্দোলনকারী কর্মীদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ পুলিশ দিয়ে সাধারণ কর্মচারী ও গ্রাহকের উপর চড়াও হয়ে লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
চাকরিচ্যুত কর্মচারী নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, চাকরিতে পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত তাঁদের এই আন্দোলন ও কর্মসূচি চলমান থাকবে। তাঁদের উত্থাপিত প্রধান ৬টি দাবির মধ্যে রয়েছে:
চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে বিনা কারণে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের স্বপদে পুনর্বহাল করতে হবে।
প্রহসনমূলক পরীক্ষা বর্জনের কারণে দেওয়া ‘পানিশমেন্ট ট্রান্সফার’ বন্ধ করতে হবে।
ওএসডি প্রত্যাহার করে সব কর্মকর্তাকে সক্রিয় করতে হবে।
শর্ত আরোপ করে সব ধরনের ‘অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট’ নেওয়া বন্ধ করতে হবে।
কর্মকর্তাদের ওপর চালানো মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
পরীক্ষা বর্জনের জন্য দায়ের করা জিডি ও হয়রানিমূলক মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
ঘণ্টাব্যাপী অবরোধের পর দুপুর একটার দিকে পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনকারীরা মহাসড়ক থেকে সরে যান এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।